নারী মন্ত্রী আয়শা : নতুন সিরিয়ায় মুখ্য ভূমিকায় থাকবেন নারীরা
- By Jamini Roy --
- 23 December, 2024
সিরিয়ার দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধের পর, বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতৃত্বে সিরিয়ায় একটি নতুন অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করা হয়েছে। এই অন্তর্বর্তী সরকারের একজন সদস্য হলেন আয়শা আল-ডিবস, যিনি নারীবিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব নিয়েছেন। তাঁর প্রশাসনের মূল লক্ষ্য হচ্ছে সিরীয় নারীদের পুনর্গঠনের প্রক্রিয়ায় ভূমিকা প্রদান, বিশেষ করে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
গতকাল রবিবার (২২ ডিসেম্বর) কাতার ভিত্তিক গণমাধ্যম আল-জাজিরাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে আয়শা আল-ডিবস জানিয়েছেন, সিরিয়ার নারীদের ক্ষমতায়ন এবং তাদের সমাজে অবদান রাখার সুযোগ প্রদান তাঁর সরকারের প্রধান উদ্দেশ্য। তিনি বলেন, "এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা গৃহযুদ্ধের পর, আমাদের দেশের পুনর্গঠনে নারীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকতে হবে। আমরা নারীদের স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খাতে যোগ্যতাসম্পন্ন হিসেবে নিয়োগ দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।"
আয়শা আল-ডিবস আরও বলেছেন, তাঁর সরকার সিরিয়ার সব প্রদেশ এবং সম্প্রদায়ের নারীদের আসন্ন জাতীয় সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য উৎসাহিত করবে। এই সম্মেলনে সিরিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করা হবে। তিনি বিশ্বাস করেন, এই সম্মেলন নারীদের সামনে আসার এবং দেশের শাসনব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার সুযোগ এনে দেবে।
আয়শা আল-ডিবস জানিয়েছেন, আসাদ সরকারের অধীনে নারী বন্দীদের মুক্তি এবং তাদের কল্যাণের বিষয়ে একটি বিশেষ প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হবে। এছাড়া, তিনি বলেছেন, যেসব কারা কর্মকর্তারা নারী বন্দীদের নির্যাতন করেছেন, তাদের বিচারের আওতায় আনা হবে। সাবেক বন্দী নারীদের পুনর্বাসনের জন্য মনস্তাত্ত্বিক সহায়তার পাশাপাশি স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা এবং আইনি সুরক্ষা প্রদান করা হবে, যাতে তারা কারা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে সক্ষম হন।
সিরিয়ায় ৮ ডিসেম্বর বিদ্রোহী যোদ্ধাদের দামেস্ক দখলের মাধ্যমে বাশার আল-আসাদ সরকারের পতন ঘটে। এই পতনের পর, বাশার আল-আসাদ দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান, যার ফলে ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সিরিয়ায় চালিত পারিবারিক শাসনের অবসান ঘটে। এই রাজনৈতিক পরিবর্তন সিরিয়ার মানুষের কাছে নতুন আশার আলো হয়ে এসেছে, বিশেষত নারীদের জন্য। নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের গঠন ও আয়শা আল-ডিবসের মন্ত্রিসভা সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সিরিয়ার ভবিষ্যৎকে রূপান্তরিত করার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হতে পারে।
এই পরিবর্তন সিরিয়ার নারীদের জন্য একটি নতুন সুযোগ এবং দেশের পুনর্গঠন প্রক্রিয়ায় তাদের কার্যকর অংশগ্রহণের পথ উন্মুক্ত করবে, যা দীর্ঘদিন ধরে উপেক্ষিত ছিল।